টেরাকোটা ভাস্কর্য দিয়ে কিভাবে আমরা আমাদের মনের মত করে ঘর সাজিয়ে তুলতে পারি অর্থাৎ কী ধরণের জিনিস আমরা ব্যবহার করতে পারি টেরাকোটার, যেগুলো আমাদের অন্দরসজ্জায় নান্দনিকতার ছোঁয়া আনবে, সেটা দেখার আগে আমরা একটু ছোট করে জেনে নিই টেরাকোটা জিনিসটা আসলে কি? তারপর আমরা এর ব্যবহারের দিকে আলোকপাত করব৷
টেরাকোটা বলতে আমরা বুঝি পোড়ামাটি৷ টেরা শব্দের অর্থ হলো মাটি আর কোটা শব্দের অর্থ হলো পোড়ানো৷ দুটো মিলিয়ে হল টেরাকোটা৷ এটি একটি লাতিন শব্দ৷ পোড়ামাটির তৈরি জিনিসে বিভিন্ন নকশা কেটে বা পোড়ামাটিকে ছাঁচে ফেলে তার উপর বিভিন্ন নকশা এঁকে নানারকম বস্তুর রূপ দেওয়া হয়৷ যত দিন যাচ্ছে তত কিন্তু এই পোড়ামাটির জিনিসের চাহিদা বাড়ছে৷ এটা আমাদের বাংলার একটা বহু পুরনো শিল্প যা বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুরের দিকে এবং বর্ধমানের কালনার দিকে মূলত আমরা দেখতে পাই৷
বর্তমানে ঘরসজ্জার কাজে এই পোড়ামাটির বা টেরাকোটার জিনিসের ব্যবহার করে নান্দনিকতার ছোঁয়া আনা হচ্ছে যা আধুনিক সাজসজ্জার দিক থেকে ভিন্ন অথচ একটা দৃষ্টিনন্দন চিত্রপট আমাদের উপহার দেয়৷
এবার আমরা দেখে নিই, টেরাকোটার ভাস্কর্য দিয়ে কীভাবে সহজ উপায়ে আমরা আমাদের ঘর সাজিয়ে তুলতে পারি৷ ঘরের কথা বললে প্রথমেই আমাদের মাথায় আসে বসার ঘরের কথা৷ বলা যেতে পারে এটিই বাড়ির প্রথম জায়গা যেখানে অতিথি ঢুকেই প্রথম পরিচয় পান গৃহকর্তার রুচির, তাই বসার ঘরের সাজসজ্জা বিশেষ মহত্ত্ব বহন করে অন্দরসজ্জার ক্ষেত্রে৷
![]() |
| এই ধরণের টেরাকোটা ঘোড়া আপনি খুব সহজেই Amazon.in-এ পেয়ে যাবেন। |
আমরা টেরাকোটাকে বিভিন্ন ভাবে ব্যবহার করতে পারি যেমন:
গাছের টবে টেরাকোটা:
ইণ্ডোর প্লান্ট কিন্ত বরাবরই বসার ঘরে একটা ভিন্নরূপ আনতে সক্ষম। তাই ঘরসাজাবার সময় ইন্ডোর প্লান্টের দিকে নজর দেওয়া উচিত, কারণ এগুলি বিশেষ ভূমিকা নেয় অন্দরসজ্জায় আর বর্তমানে বহুতল ভবনের যুগে মানুষের বাগানের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রেখেছে এই ইনডোর প্ল্যান্টগুলি বা ব্যালকোনির একটুকরো সবুজের সমারোহ৷ তাই বিভিন্ন নকশাযুক্ত খোদাই-করা টেরাকোটার টবের বাবহার আপনার অন্দরসজ্জাকে যে আরও দৃষ্টিনন্দন করে তুলবে সেটা বলাই বাহুল্য৷
ওয়াল ডেকোরে টেরাকোটা:
এখন অনেকেই পছন্দ করেন থিমযুক্ত সাজসজ্জা সে ক্ষেত্রে ঘরের লবি তে একটা দেশীয় শৈল্পিক পরিবেশ আন্তে টেরাকোটার তৈরী ওয়াল পিস ছোট ছোট মাটির পাত্র ব্যবহার করা যেতে পারে ওয়াল ডেকোরে। বারান্দায় কিংবা সদর দরজার বাইরে বা ঘরের সিলিং এ টেরাকোটার তৈরি ওয়াল হ্যাঙ্গিং কিন্তু সাধ ও সাধ্যের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটাতে যথেষ্ট।
আসবাবে টেরাকোটা:
বর্তমানে বড় বড় ফার্ণিচারের কোম্পানিগুলি আসবাবে টেরাকোটার ব্যবহারকে গুরুত্ব দিয়েছেন। যেমন বেড কিংবা ড্রেসিং টেবিলের বর্ডারে টেরাকোটার তৈরি ফুল পাতার নকশার ব্যবহার একটা দৃষ্টিনন্দন সজ্জাকে তুলে ধরে।
টেরাকোটার টাইলস:
টাইলস কথাটির সঙ্গে বর্তমানে আমরা মোটামুটি সবাই পরিচিত। কিন্তু সেই টাইলসের সাথে টেরাকোটার টাইলসের যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। এই টাইলস ঘরেতে একটা শীতল পরিবেশ বজায় রাখে। এই টাইলস বিভিন্ন চিত্র দৃশ্য ডিজাইন এবং রংয়ের হয় যা শুধু বসার ঘর নয়,ডাইনিং স্পেসেও চমত্কার ভাবে ব্যবহার করা হয়।
সেন্টার টেবিলে টেরাকোটার পট:
ঘরের সেন্টার টেবিলে একটা টেরাকোটার পট কিন্তু ঘরের সৌন্দর্য এক লহমায় বাড়াতে যথেষ্ট। তার গায়ে থাকবে রং বাহারি নকশা। দামটাও মধ্যবিত্তের সাধ্যের মধ্যেই। তাই সেন্টার টেবিলে টেরাকোটার পট কিন্তু নিঃসন্দেহে চোখ টানবে।
![]() |
| এই ধরণের টেরাকোটা পট আপনি খুব সহজেই Amazon.in-এ পেয়ে যাবেন। |
এক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য হলো বাঁকুড়ার বোঙা হাতি ও ঘোড়া যা এখন প্রায় সব শিল্পমেলাতেই সহজলোভ্য। এই সমস্ত হস্তশিল্প এখন অনলাইন স্টোরগুলোতেও পাওয়া যাচ্ছে। যেমন The Bengal Store নামের অনলাইন স্টোরটিতে বেশ কিছু বাংলার মাটির পুতুল বিশেষতঃ পোড়ামাটির বা টেরাকোটার ঘর সাজানোর জিনিস পাওয়া যায়।
এছাড়া হাতের কাছে রয়েছে আরও কিছু সহজলভ্য জিনিস যাতে আমরা সহজেই ঘরের চেনা রূপটাকে বদলে দিতে পারে, যেমন টেরাকোটার তৈরি মাটির পুতুল, ফুলদানি, কলমদানি, ফটোফ্রেম, শো-পিস পোড়ামাটির দেয়াল ঘড়ি, মাটির তৈরি ল্যাম্পশেড মূহুর্তেই আপনার অন্দরসজ্জাকে আকর্ষণীয় করে তুলতে যথেষ্ট। আর এভাবেই বাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্পকে ফিরিয়ে আনতে পারব আমাদের দৈন্দিন জীবনে।
আমরা Amazon Associates প্রোগ্রামের অংশ এবং যোগ্য কেনাকাটার মাধ্যমে কমিশন উপার্জন করি।




মন্তব্যসমূহ